উখিয়ায় ইউএনও কামরুলের বদলে যাওয়া প্রশাসন

রেজাউল করিম, উখিয়া: গত বছরের ডিসেম্বরে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে যোগদান করেন মোহাম্মদ কামরুল হাসান চৌধুরী। বিসিএস (প্রশাসন) ৩৫তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা লামায় সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন শেষে উখিয়ায় আসেন। তাঁর পদায়নের প্রজ্ঞাপন জারি হয় ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর। যোগদানের পর অল্প সময়ের মধ্যেই উখিয়ার প্রশাসনিক পরিবেশে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসে—একজন সৎ, মানবিক ও কর্মঠ প্রশাসকের নেতৃত্ব কীভাবে একটি অঞ্চলকে বদলে দিতে পারে, ইউএনও কামরুল তার জীবন্ত উদাহরণ।

স্থানীয় না হয়েও দায়িত্ব পালনে তিনি কোনো পক্ষপাতিত্ব দেখাননি; বরং দেখিয়েছেন দায়িত্ববোধ, নিষ্ঠা ও সততার পরিচয়। সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি মানুষের দীর্ঘদিনের হতাশা তিনি বদলে দিয়েছেন আস্থা ও বিশ্বাসে। দ্রুতই তিনি এলাকাবাসীর নির্ভরতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন। প্রমাণ হয়েছে—উন্নয়ন কেবল কাগজে-কলমে নয়; একজন কর্মকর্তা সত্যিকার অর্থে জনগণের কথা ভাবলে বাস্তবেই পরিবর্তন সম্ভব।

উখিয়ার শিক্ষা খাতে তাঁর নেওয়া পদক্ষেপগুলো আজ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ‘উপজেলা প্রশাসন উচ্চ বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ ও আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উপহার দিয়েছেন, যা উখিয়ার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বড় একটি অর্জন। রাজাপালং ইউনিয়নের করইবনিয়া এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ—যেখানে আড়াই থেকে সাড়ে চার কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বিদ্যালয় ছিল না—সেই সংকট নিরসনে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান। টিএন্ডটি গুচ্ছগ্রামে ‘স্বপ্নযাত্রা’ শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য নতুন আশার আলো হয়ে উঠেছে।

আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল—সব কৃতিত্ব ও স্বীকৃতি তিনি নিজের নামে না নিয়ে এলাকার মানুষের প্রতি সমর্পণ করেন। ব্যক্তিগত প্রচারণার প্রতি অনীহা থাকলেও মাঠে-ঘাটে থেকে দিনরাত পরিশ্রম করা তাঁর নেতৃত্ব ছাড়া এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন কখনো সম্ভব হতো না।

ইউএনও অফিসেও এসেছে স্পষ্ট পরিবর্তন। এখন মানুষ দ্রুত সেবা পাচ্ছে, সমস্যা জানালে সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের দূরত্ব কমেছে, বেড়েছে আস্থা। একটি উপজেলাকে বদলে দিতে একজন সৎ ও কর্মপ্রাণ কর্মকর্তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ—উখিয়ার ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী তার প্রমাণ।

Post a Comment

0 Comments