কক্সবাজারে অনুমোদনহীন স্পা, অবৈধ সম্পর্কের ভয়াবহ চিত্র!

নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের পর্যটনকেন্দ্রে গত কয়েক বছরে ব্যাপক সংখ্যায় অনুমোদনবিহীন স্পা ও থেরাপি সেন্টার গড়ে উঠেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে ‘ব্যাঙের ছাতার মতো’ হিসেবে পরিচিত। এসব সেন্টারের বেশিরভাগই সরকারি অনুমোদন ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে। স্পা শিল্পের আন্তর্জাতিক মান ও পেশাগত নীতিমালা উপেক্ষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিশেষত সুগন্ধা পয়েন্টের গোল্ড থাই স্পা নিয়ে নানা অভিযোগের নতুন করে পুনরায় আলোচনার সূচনা হয়েছে। গোল্ড থাই স্পার মালিক নুর আহম্মদের মেয়ে রেহানা বেগম রিংকি ও তার প্রেমিক আতা উল্লাহ রেজভীর নেতৃত্বে পরিচালিত এই স্পায় স্বামী-পরিত্যক্তা ও আর্থিকভাবে দুর্বল নারীদের থেরাপিস্ট বানিয়ে ‘বডি ম্যাসাজ’র আড়ালে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এর ফলে যৌনবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যানার দিয়ে এসব স্পার প্রচার-প্রচারণা চলছে। কেউ কেউ পর্যটককে স্পা করার নাম করে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিয়ে জোর করে বাধ্য করার অভিযোগ তুলেছেন।

গোল্ড থাই স্পায় এক পর্যটক ভিডিও ধারণের অভিযোগ তুলে পুলিশের হুমকি ও চাঁদাবাজির শিকার হয়েছেন, যা স্পার অবৈধ কার্যক্রমের এক ভয়াবহ দিক প্রকাশ করে।

তদন্তে জানা গেছে, এই স্পাগুলো অধিকাংশই তরুণী ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী দিয়ে পরিচালিত হলেও আসল মালিকানায় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও অসাধু পুলিশ সদস্য জড়িত।

গোল্ড থাই স্পা ছাড়াও ‘লাক্সারি থাই স্পা’, ‘স্মার্ট থাই স্পা’, ‘এভ্যালা টাচ থাই স্পা’, ‘নিউ সেভেন এসকে থাই স্পা’সহ বিভিন্ন স্পা সেন্টার নিয়মবিহীন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য আলোচিত।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, গোল্ড থাই স্পা মাদকের বিস্তার ও অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। মাদক সেবন, ব্ল্যাকমেইল, কর্মীদের উপর হয়রানি, পরিবারের সদস্যদের ভয় দেখানোসহ নানা অনিয়ম রয়েছে।

চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনুমোদনহীন স্পা পরিচালনা, অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত থেরাপিস্ট ও গোপন যৌন কার্যক্রমের কারণে যৌনবাহিত রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়ছে।
টুরিস্ট পুলিশ ও প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছেন, অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে স্থানীয়রা মনে করেন, ইতোমধ্যে এসব স্পা সাময়িকভাবে বন্ধ হলেও পুনরায় চালু হচ্ছে।
পর্যটন ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এসব স্পার বিরুদ্ধে সঠিক মনিটরিং ও দ্রুত আইনি ব্যবস্থা প্রয়োজন।

Post a Comment

0 Comments