আবহাওয়া অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয় জানিয়েছে, নিম্নচাপটি বর্তমানে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ–বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে আগামী সোমবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়া অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে তারা। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় ১–৩ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা থাকায় স্থানীয় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
অমাবস্যার সঙ্গে নিম্নচাপের প্রভাবে সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২–৩ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর দ্বীপাঞ্চলে বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইলের আনিসের ডেইল, তাবলর চর, কাহার পাড়া, সাইট পাড়া এবং বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের অন্তত ৫০টি ঘরবাড়ি ও স্থাপনা পানিতে তলিয়ে গেছে।
মহেশখালীর ধলঘাটা ও মাতারবাড়ির বেশ কিছু নিম্নাঞ্চলেও পানি ঢুকে পড়েছে। কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথোয়াই প্রু মারমা জানিয়েছেন, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়ন। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে বারবার পানি ঢুকে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। কিছু ভাঙন মেরামতের কাজ শেষ হলেও অনেক জায়গায় কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। প্লাবিত এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে, সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ে কক্সবাজার সৈকতের শৈবাল পয়েন্টে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। গত তিন দিন ধরে অব্যাহত এ ভাঙনে শত শত ঝাউগাছ উপড়ে গেছে এবং বিস্তীর্ণ বালিয়াড়ি বিলীন হয়ে গেছে। টেকনাফ অংশের মেরিন ড্রাইভ সড়কের কিছু পয়েন্টেও নতুন করে ভাঙনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, “কুতুবদিয়া ও মহেশখালীসহ কয়েকটি এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় কিছু ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি প্রস্তুতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গোসলে নামার ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড টিম। হাঁটু পানির নিচে নামতে নিষেধ করা হয়েছে।
উপকূলের মানুষ এখন উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে—তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন: উপকূল রক্ষা বাঁধগুলোর ভাঙা জায়গাগুলো কখন স্থায়ীভাবে মেরামত হবে?
0 Comments