মেয়েকে বাঁচাতে আগুনে ঝাঁপ, শ্রেণিকক্ষে পুড়ে মৃত্যু মায়ের: কাঁদছে গাংনীর রজনী খাতুনের পরিবার

সিবি ডেক্স: রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরও এক মর্মন্তিক মৃত্যুতে কাঁদছে মেহেরপুরের গাংনী। মেয়েকে বাঁচাতে আগুনের লেলিহান শিখায় ঝাঁপ দিয়েছিলেন এক মা—রজনী খাতুন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে নিজেই পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেলেন, বেঁচে গেল তার কন্যাশিশুটি।

সোমবার (২১ জুলাই) মাইলস্টোন কলেজের ওপর বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। বিধ্বস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।

ঘটনার সময় ধারণা করেছিলেন রজনী খাতুন—তার মেয়ে তখনও শ্রেণিকক্ষে আটকা পড়ে আছে। তিনি কোনো কিছু না ভেবেই ছুটে যান সেই আগুনের দিকেই। কিন্তু তিনি জানতেন না, শিশুটি এরইমধ্যে নিরাপদে বাইরে বেরিয়ে গেছে।

ফলে মেয়েটি প্রাণে বেঁচে গেলেও, মা রজনী খাতুন অগ্নিদগ্ধ হন। দ্রুত উদ্ধার করে তাঁকে ঢাকার সিএমএস হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

রজনী খাতুন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদের মেয়ে। তাঁর স্বামী জহিরুল ইসলাম ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় থাকতেন; পরিবারসহ থাকতেন রাজধানীতেই। তাদের তিন সন্তান।

রজনীর মরদেহ দাফনের জন্য নেওয়া হবে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চর সাদিপুর গ্রামে, যা তার স্বামীর পৈতৃক নিবাস।

রজনীর মৃত্যুতে তার পরিবার, স্বজন এবং পুরো এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এক মা কীভাবে নিজের জীবন দিয়ে সন্তানকে আগুন থেকে বাঁচাতে পারেন—রজনী খাতুনের এই আত্মত্যাগ সেই প্রশ্নের এক বেদনার্ত উত্তর।

Post a Comment

0 Comments