সিবি ডেক্স: সাগরের অস্বাভাবিক জোয়ার ও নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের একাধিক পয়েন্টে ধস নেমেছে। গত দুই দিনের প্রবল ঢেউয়ে ধসে পড়েছে বালিয়াড়ি, উপড়ে গেছে কয়েক হাজার ঝাউগাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সৈকতে স্থাপন করা পুলিশ বক্স, অস্থায়ী দোকান, ওয়াচ টাওয়ারসহ নানা অবকাঠামো।
শৈবাল, লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, ঢেউয়ের আঘাতে বালিয়াড়িতে তৈরি হয়েছে বিশাল গর্ত। বৈদ্যুতিক খুঁটির ওপর গাছ পড়ায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের শঙ্কা, ভাঙন অব্যাহত থাকলে সৈকতের পাশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, পর্যটন পুলিশের কার্যালয়, জেলা প্রশাসনের তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্রসহ সরকারি স্থাপনাও হুমকিতে পড়তে পারে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের তথ্যমতে, ১৯৬১ সাল থেকে এই অঞ্চলে শুরু হয় ঝাউগাছ রোপণ, যা পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়ে ৩০০ হেক্টর এলাকায়। মোট সাড়ে সাত লাখ ঝাউগাছ উপকূলীয় সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক ঢেউ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে অনেক গাছ উপড়ে যাচ্ছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ঢেউয়ের ধাক্কায় গাছের গোড়া থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, ফলে ঝাউগাছ পড়ে যাচ্ছে। উপকূল রক্ষায় আধুনিক বাঁধ নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরই ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ বসানো হয়, কিন্তু তা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। ‘দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও উপযুক্ত বাঁধ ছাড়া কক্সবাজার সৈকত রক্ষা করা সম্ভব নয়।’
কক্সবাজারের এই দৃষ্টিনন্দন সৈকতের অস্তিত্ব রক্ষায় এখনই নেওয়া প্রয়োজন টেকসই ও জরুরি পদক্ষেপ।
0 Comments