উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে পুড়ে ছাই শিক্ষার্থীরা: ক্যানোলা বসানোরও উপায় ছিল না, চিকিৎসকের হৃদয়বিদারক বর্ণনা

সিবি ডেক্স: রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে স্কুল ক্যাম্পাসে পড়ার পর মুহূর্তেই আগুনে গ্রাস করে নেয় অনেক কক্ষ ও শিক্ষার্থীদের।

উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. আনারুল ইসলাম জানান, সোমবার রাতে আহত শিশুদের যেভাবে আনা হয়েছে, তা দেখে চিকিৎসকরাও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, “প্রথম ধাপে যে ৫০ জন শিশু এসেছিল, তাদের অনেকের শরীর ৭০ শতাংশ পর্যন্ত দগ্ধ ছিল। ৩০ শতাংশের ওপর দগ্ধতা ছিল প্রায় সবারই।”

সবচেয়ে হৃদয়বিদারক চিত্রটি উঠে আসে তাঁর এই কথায়: “এমন কিছু শিশু ছিল, যাদের শরীর এতটাই পুড়ে গিয়েছিল যে, তাদের হাতে ক্যানোলা পর্যন্ত বসানো যায়নি।”

তিনি আরও জানান, বার্ন ইউনিট না থাকায় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এসব শিশুদের দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও, যারা এসব শিশুদের হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন, তাঁদের মধ্যেও মানসিক ট্রমা, শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ ও হাইপারভেন্টিলেশনের মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকদের ভাষায়, এ এক “মাস ক্যাজুয়ালটি”-র মতো পরিস্থিতি।

বর্তমানে হাসপাতালটিতে ২০-২৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন, যাঁদের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সংক্রমণ নেই, রক্ত বা আইসিইউ প্রয়োজন নেই—তবে আতঙ্ক ও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি নেই।

এই দুর্ঘটনা শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।

Post a Comment

0 Comments