যুদ্ধবিরতিতেও গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা

যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা অবস্থাতেই গাজায় নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার ভোর থেকে ট্যাঙ্ক ও ড্রোনসহ বিভিন্ন সামরিক প্ল্যাটফর্ম থেকে বিক্ষিপ্ত আক্রমণে অন্তত পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন শিশু এবং একজন সাংবাদিকও রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। প্রত্যক্ষদর্শী ও চিকিৎসা সূত্র বলছে, মার্কিন-মধ্যস্থ যুদ্ধবিরতির শর্ত বারবার লঙ্ঘন করেই ইসরায়েল এই হামলাগুলো চালাচ্ছে।

গাজা সিটির আল-তুফাহ এলাকায় গোলাবর্ষণে প্রথমে দুইজন নিহত হন। আহত ১৫ জনকে দ্রুত আল-আহলি ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে জায়তুন এলাকায় ইসরায়েলি গুলিতে আরেক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান। খান ইউনিসের কেন্দ্রীয় অংশে ড্রোন হামলায় নিহত হন ফটোসাংবাদিক মাহমুদ ওয়াদি। পরিবার ও চিকিৎসকদের অভিযোগ—তিনি এমন এক স্থানে ছবি তুলছিলেন যেখানে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান থাকার কথা নয়।

এদিকে গাজা সিটির আল-দারাজ স্কুলে গোলাবর্ষণে নারীসহ ১৭ জন আহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয়স্থল হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি আরও বড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গাজা সিভিল ডিফেন্স বলছে, আল-তুফাহ এলাকার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও পাঁচজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

উত্তরের বেইত লাহিয়ায় বহু ভবন গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, এবং এই এলাকা এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণে। গাজা সিটি, খান ইউনিস ও রাফাহও হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে আছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫৬ জন নিহত ও ৯০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। আর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে নিহতের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে—যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ফটোসাংবাদিক মাহমুদ ওয়াদি নিহত হওয়ার পর গাজায় সাংবাদিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৭ জনে। গাজা মিডিয়া অফিসের অভিযোগ—ইসরায়েল সচেতনভাবে সাংবাদিকদের টার্গেট করছে যাতে গণহত্যার বাস্তবতা বিশ্বমাধ্যমে তুলে ধরা না যায়।

Post a Comment

0 Comments