অভিযানে একমাত্র গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হলো মো. ফারুক (২৭), পিতা গোলাম কাদের, উনচিপ্রাং ৩নং ওয়ার্ড, রইক্ষ্যং এলাকার বাসিন্দা। সে অভিযুক্ত গুদামের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছিল বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অভিযানের সময় শ্রমিকদের সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করে একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়। পরে তল্লাশিতে গুদামঘরে বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্যসামগ্রী উদ্ধার হয়।
জব্দকৃত মালপত্রের মধ্যে ছিল—
চাল: ২,১৫০ কেজি
আটা: ১,৫২০ কেজি
তেল: ১৭০ লিটার
পেঁয়াজ: ৩২০ কেজি
চিনি: ৭৫০ কেজি
ডাল: ৫৫০ কেজি
হলুদ গুঁড়ো: ৬০০ কেজি
সাবান: ৭,৫০০ পিস
ব্যাটারি: ১২ ভোল্টের ৮টি ও ৬ ভোল্টের ২টি
বস্তা সেলাই মেশিন: ১টি
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক জানায়, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (WFP) বরাদ্দকৃত খাদ্য গোপনে গুদামে এনে মোড়ক পরিবর্তন করা হতো। এরপর তা স্থানীয় ডিলারদের কাছে বিক্রি করা হতো। শুধু তাই নয়, খাদ্যসামগ্রীর একটি অংশ মিয়ানমারে পাচার করা হতো বলে ফারুক স্বীকার করে।
এই পাচার চক্রে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২২-এর berüchtigt (কুখ্যাত) ব্যবসায়ী মনু মাঝি এবং একটি স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতির নামও উল্লেখ করেছে ফারুক। রেশন পাচারে ব্যবহার করা হতো উনচিপ্রাং ইউনিয়নের নদীপথের গোপন ঘাটগুলো, যেগুলো দিয়ে গভীর রাতে মালামাল মিয়ানমারে পাচার হতো।
সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “চোরাচালান ও মাদক নির্মূলে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি ও অভিযান জোরদার করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের রেশন চুরির সঙ্গে যেসব প্রশাসনিক ও ব্যবসায়িক চক্র জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গ্রেফতারকৃত ফারুককে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়িতে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, এই চক্র বহুদিন ধরেই মানবিক সহায়তার মালপত্র চুরি করে বিক্রি ও পাচারের মাধ্যমে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টিই পারে এই ধরনের চক্রকে নির্মূল করতে।
0 Comments