বিচক্ষণ ট্রেনচালকের কৌশলে রক্ষা পেল হাতির পাল ও ৫০০ যাত্রী: চুনতিতে প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেল সবাই

সিবি ডেক্স: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে চুনতি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য এলাকায় মঙ্গলবার রাত ১০টা ২৫ মিনিটে ঘটে যায় এক চরম নাটকীয় ঘটনা। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর "সৈকত এক্সপ্রেস" ট্রেনটি চলছিল প্রায় ৫০০ যাত্রী নিয়ে। হঠাৎ করেই রেললাইনের ওপর দেখতে পাওয়া যায় একটি হাতিকে। মুহূর্তের মধ্যে বিপদের আঁচ পেয়ে বিচক্ষণ ট্রেনচালক আবদুল আউয়াল জরুরি ব্রেক কষে ট্রেন থামিয়ে দেন। এতে রক্ষা পায় হাতিটি এবং বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

সেই মুহূর্তে চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ট্রেনের হুইসেলে বিরক্ত হয়ে হাতির পাল ট্রেনের বগিতে ধাক্কা দেয় বলে জানায় গার্ড সাখাওয়াত হোসেন। শেষ বগির দরজায় আঘাত চলতে থাকলে গার্ড দ্রুত ফোন করে ট্রেনচালককে সতর্ক করেন। পরে দ্রুত ট্রেন চালিয়ে এলাকা ত্যাগ করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রী রিদুয়ান কবির জানান, যাত্রীরা রেললাইনের পাশেই একটি হাতি দেখতে পান, যার পরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই হাতির আঘাতের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেন। যদিও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, তবে সবার মনে আতঙ্ক রয়ে গেছে।

রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী বাহার উদ্দিন জানান, হাতির দল রেললাইনের ব্যারিয়ার পেরিয়ে রেলপথে উঠে পড়ে। চালকের দ্রুত প্রতিক্রিয়ায় ট্রেন থেমে গেলে ট্রেনের গায়ে ধাক্কা দিয়ে হাতি চলে যায়।

এর আগে ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর একই রেললাইনে ট্রেনের ধাক্কায় এক বন্য হাতি গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এই প্রেক্ষাপটে ট্রেনচালক আবদুল আউয়াল আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, "একই ঘটনা আবার ঘটতে যাচ্ছিল, ভবিষ্যতে আরও ঘটতে পারে। রেল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে হাতিরাও নিরাপদে থাকে, যাত্রীরাও।"

সৈকত এক্সপ্রেস রাত একটায় চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছায়। রেল বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ট্রেনচালক ও গার্ডের তাৎক্ষণিক ও সাহসী সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। এমন মানবিক নজির রেল সেবায় বিরল উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

Post a Comment

0 Comments