বাবার চার বছরের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী, সন্তানের জন্মের পরও হাইকোর্ট বলল—এটা 'বিরলতম' নয়!

সিবি ডেক্স: হরিয়ানার পলওয়াল জেলায় ঘটে যাওয়া একটি রোমহর্ষক ও নৃশংস ঘটনা ফের প্রশ্ন তুলেছে বিচারব্যবস্থার ন্যায়বোধ নিয়ে। নিজের কন্যাসন্তানকে টানা চার বছর ধরে ধর্ষণ করে গর্ভবতী করেন এক ব্যক্তি। ওই কিশোরী পরে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। তদন্তে সব প্রমাণ মেলে, এমনকি ডিএনএ পরীক্ষায়ও প্রমাণ হয়—শিশুর জন্মদাতা তার পিতা নিজেই।

২০২৩ সালে স্থানীয় নিম্ন আদালত এই ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ (rarest of the rare) বলে উল্লেখ করে ধর্ষক বাবাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। কিন্তু সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে আপিল করলে ডিভিশন বেঞ্চ (বিচারপতি গুরবিন্দর সিং গিল ও বিচারপতি জসজিৎ সিং বেদী) মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেন।

ঘটনা সংক্ষেপে:

২০২০ সালে, মা–হারা ১৭ বছরের কিশোরী তার দাদা-দাদির সহায়তায় পুলিশের দ্বারস্থ হয়। জানায়, ১৩ বছর বয়স থেকেই বাবা তাকে ধর্ষণ করে আসছে। কাউকে বললে হত্যার হুমকি দেওয়া হতো। অসুস্থ হলে ঠাকুমা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান, তখনই ধরা পড়ে সে গর্ভবতী। মেয়েটি পরে কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়।

বিচার চলাকালে প্রমাণিত হয়—অভিযুক্ত বারবার ধর্ষণ করেছে ও তাকে ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে রেখেছে। প্রাথমিক আদালত মৃত্যুদণ্ড দিলেও হাইকোর্ট রায়ে বলে, “এটি ঘৃণ্য অপরাধ ঠিকই, তবে আইনগত মানদণ্ড অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড প্রযোজ্য ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ শ্রেণিতে পড়ে না।”

দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া:

আইনজীবী, সমাজকর্মী ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা হাইকোর্টের যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
একজন নারী অধিকারকর্মী বলেন, “মেয়েকে ধর্ষণ করে সন্তান জন্ম দেওয়ানো যদি ‘রেয়ারেস্ট’ না হয়, তবে কোনটা হয়?”
অন্য এক আইনজীবীর মন্তব্য—“সব প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও যদি মৃত্যুদণ্ড না হয়, তবে ‘পকসো আইন’-এর মৃত্যু দণ্ড ধারা থাকার মানেই বা কী?”

এই ঘটনায় জনমানসে গভীর হতাশা ছড়িয়েছে। অনেকেই বলছেন—এমন রায় বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা টলে দিচ্ছে, আর অপরাধীদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিচ্ছে।

Post a Comment

0 Comments