সবশেষ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী বেড়াতে এসে সাগরে নামলে স্রোতের তোড়ে ভেসে যান। উদ্ধার হয় দুইজনের মরদেহ। তবে এখনও খোঁজ মেলেনি অরিত্র হাসানের। তার খোঁজে তল্লাশি চালান লাইফ গার্ড, বিচ কর্মী, স্থানীয় জেলে ও নৌবাহিনীর সদস্যরা।
নিখোঁজ অরিত্রের মা জেসমিন আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
‘আমার ছেলেটা আমার বুকে ফিরে আসুক এটাই আমি চাই। এই অথৈ সমুদ্রে রেখে তো আমি যেতে পারব না। আমার ছেলেকে রেখে বাসায় আমি একটা মুহূর্তও থাকতে পারব না।’
এই ঘটনা আবারও প্রশ্ন তোলে—সাগরে পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত সতর্কতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা আছে কি?
সি সেইভ ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন,
‘সতর্কতা না মেনে সাগরে নেমে বিপদে পড়ছেন অনেকে। সাত মাসে ১২ জন মারা গেছেন। জোয়ার–ভাটার সময় জেনে নামতে হবে, বিপদজনক স্থান চিহ্নিত করতে হবে, আর লাইফ গার্ডের পরামর্শ ছাড়া নামা উচিত নয়।’
বর্তমানে লাবণী থেকে কলাতলী পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় মাত্র ২৭ জন লাইফ গার্ড দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের পাশে কিছু স্বেচ্ছাসেবী থাকলেও এ সংখ্যাটি তুলনামূলকভাবে পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহেদুল আলম বলেন,
‘সি-নেটিংয়ের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। পর্যটকদের উপকার হবে এমন পরিকল্পনাই বাস্তবায়নের পথে।’
লাইফ গার্ডের তথ্যমতে, গত ১০ বছরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সাগরে ডুবে মারা গেছেন ৬৪ জন, এর মধ্যে শুধু গত দুই বছরেই প্রাণ হারিয়েছেন ২৪ জন। তবে একই সময় ৮০০ জনেরও বেশি পর্যটককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
দুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতা বাড়ানো এবং নিরাপত্তা জোরদার করা ছাড়া উপায় নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
0 Comments