রাজশাহীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’র দুই নেতা—রাজশাহী মহানগর শাখার মুখ্য সংগঠক মেহেদী হাসান এবং যুগ্ম সদস্যসচিব সুয়াইব আহমেদ—সাংবাদিকদের কক্ষে তালাবদ্ধ করার হুমকির ঘটনায় সাময়িকভাবে অব্যাহতি পেয়েছেন। গুরুতর সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের পর মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত জানায়।
কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব (দফতর) আসাদুর রহমান স্বাক্ষরিত সাংগঠনিক বিজ্ঞপ্তিটি একই রাতেই সংগঠনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুই নেতাকে কমিটির সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো এবং কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না—সে বিষয়ে দুই কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত ও সরাসরি উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার বিকালে, যখন রাজশাহীতে এনসিপির জেলা কমিটির সংবাদ সম্মেলন চলছিল। নতুন কমিটির আহ্বায়ককে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ অভিহিত করে দলীয় একাংশ বাইরে বিক্ষোভে নামে। এসময় মেহেদী ও সুয়াইব সাংবাদিকদের উদ্দেশে ‘বের না হলে কক্ষে তালা মেরে রাখা হবে’ বলে হুমকি দেন। সাংবাদিকদের প্রতিবাদে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং দুই নেতা স্থান ত্যাগ করলে সাংবাদিকরাও তাদের পিছু নেন। পরে পর্যটন মোটেল প্রাঙ্গণে কিছুক্ষণ তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
ঘটনার পর সুয়াইব সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান এবং বলেন, রাগের মাথায় এ মন্তব্য করেছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে অতীতেও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে—গত ৫ আগস্টের পর দুই নারীকে খুঁটিতে বেঁধে মারধর এবং ট্রেন থামাতে ঢিল মারার অভিযোগসহ। এসব প্রশ্ন তুললে তিনি উত্তর এড়িয়ে যান।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ঘোষিত ১১৪ সদস্যের এনসিপির রাজশাহী জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই অভ্যন্তরীণ বিরোধ বাড়ছিল। ঘোষণার পরদিন যুগ্ম সদস্যসচিব জিহান মোবারক পদত্যাগ করেন এবং সোমবার আরও পাঁচ সদস্য কমিটি থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
0 Comments