দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ এখন মৃত্যুফাঁদ!

সিবি ডেক্স: চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০৩ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেললাইন চালু হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। আধুনিক এই রেলপথ পর্যটন ও যোগাযোগে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুললেও, এখন তা পরিণত হয়েছে প্রাণঘাতী মৃত্যুফাঁদে। গত ২০ মাসে এই পথে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০ জন, আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে রয়েছে ৭২টি লেভেল ক্রসিং। এর মধ্যে ৫৬টিতে নেই কোনো ব্যারিয়ার বা গেটম্যান। কেবল ১৬টিতে সীমিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ইসলামাবাদ–রামু সেকশনে ১৭টি ক্রসিংয়ের মধ্যে মাত্র একটিতে গেটম্যান আছে।

২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের, এর মধ্যে গত এক বছরেই ১৭ জন। এমনকি ট্রেনের নিচে পিষ্ট হয়ে মারা গেছে কয়েকটি বন্য হাতিও।

রামু, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, হারবাংসহ বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়রা জানিয়েছেন—ব্যারিয়ারহীন ক্রসিংগুলোয় প্রতিদিন ভয় নিয়ে পার হতে হয়। অনেক সময় ট্রেনের শব্দও ঠিকমতো শোনা যায় না, ফলে দুর্ঘটনা এড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে।

চুয়েটের সাবেক অধ্যাপক মাহমুদ ওমর ইমাম বলেন, “এই রেলপথে সিগন্যালিং সিস্টেম ও সার্বক্ষণিক গেটম্যান না থাকায় ঝুঁকি বাড়ছে। রেলক্রসিংয়ে ঘণ্টা ও লাল বাতি স্থাপন করলে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।”

রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীণ জানান, “ইতোমধ্যে ৪৬টি ক্রসিং আন্ডারপাসে রূপান্তর করা হয়েছে। বাকিগুলোতে গেটম্যান ও ব্যারিয়ার স্থাপনের বিষয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করছে।”

১১ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ রেলপথে বর্তমানে চলছে চার জোড়া ট্রেন। প্রকল্প পুরোপুরি শেষ না হলেও ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ের কারণে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ এখন জননিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Post a Comment

0 Comments