তিনি বলেন, এই সংলাপ মূলত সেপ্টেম্বরের বৈঠকের প্রস্তুতিমূলক ধাপ। এর বিশেষ তাৎপর্য হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সরাসরি অংশগ্রহণ, যেখানে তারা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, হতাশা ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশার কথা তুলে ধরছেন। এসব মতামত নিউইয়র্ক সম্মেলনের আলোচনায় প্রতিফলিত হবে।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, সংলাপের কাঠামো চারটি থিম্যাটিক অধিবেশনকে ঘিরে সাজানো হয়েছে:
১) মানবিক সহায়তা ও চলমান তহবিল সংকট মোকাবিলা,
২) রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি ও প্রত্যাবাসনের জন্য আস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ,
৩) ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, এবং
৪) টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের কৌশল।
তিনি বলেন, সংলাপ শেষে একটি ‘চেয়ার’স সামারি’ তৈরি হবে, যাতে আলোচনার সারমর্ম ও সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং তা নিউইয়র্ক সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ আউটপুট ডকুমেন্ট হিসেবে কাজ করবে।
মানবিক সহায়তার প্রসঙ্গে সিয়াম সতর্ক করেন, সহায়তা না পেলে বড় ধরনের মানবিক দুর্যোগ তৈরি হবে। এজন্য বিদ্যমান দাতাদের পাশাপাশি নতুন উৎস থেকেও অর্থ সংগ্রহের প্রচেষ্টা চলছে।
প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও এ প্রক্রিয়া কেবল বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল নয়; মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ ও আস্থা তৈরির বিষয়টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ। তার মতে, রোহিঙ্গা সংকট এখন বৈশ্বিক দায়িত্বে পরিণত হয়েছে, তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য।
আগামীকাল সোমবার সংলাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমন্বিত প্রচেষ্টা জোরদারের আহ্বান জানাবেন।
কক্সবাজারের হোটেল বে ওয়াচে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডারস’ ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’-এ অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, জাতিসংঘ ও বৈশ্বিক সংস্থার প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের পর বাংলাদেশে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। এর পর থেকে সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
0 Comments