৮ জুলাই সকাল ৭টায় তিন বন্ধু—অরিত্র, সাদমান ও আসিফ—গোসল করতে নামেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা ঢেউয়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ হন। পরে সাদমান ও আসিফের মরদেহ উদ্ধার হলেও, অরিত্রের কোনো সন্ধান মেলেনি।
অরিত্রের বাবা সাকিব হাসান, একজন সাংবাদিক (ডেইলি নিউ এজ-এর সিনিয়র সাব-এডিটর), ও মা ঢাকা থেকে ছুটে এসে টানা ১০ দিন কাটান সমুদ্রপাড়ে। দিন-রাত সমুদ্র তীর ঘুরে বেড়িয়ে খুঁজেছেন তাঁদের একমাত্র সন্তানকে। শেষ পর্যন্ত না পেয়ে তারা এক বুক কান্না আর প্রার্থনায় ভর করে বাড়ি ফিরে গেছেন। যাওয়ার আগে বিচকর্মী ও প্রশাসনের কাছে আকুতি জানিয়েছেন—তল্লাশি যেন বন্ধ না হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম জানান, ড্রোন, স্পিডবোট, ওয়াটার বাইকসহ নানা উপায়ে ইনানী, হিমছড়ি ও সোনাদিয়ার চর পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হয়। ফায়ার সার্ভিস, পর্যটন পুলিশ, বিমানবাহিনী ও বিচকর্মীরা প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাগর ও মোহনায় খোঁজ চালিয়ে গেছেন।
অরিত্রের বাবা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "আমার একমাত্র সন্তানকে সাগরে ফেলে রেখে কীভাবে বাড়িতে ঘুমাই?" বাড়ি ফিরে তিনি ছেলের আত্মার শান্তির জন্য এতিমখানায় খাবার বিতরণ ও কোরবানি দেন। আবার কক্সবাজারে ফিরে এসে ছেলেকে খুঁজবেন বলে জানান তিনি।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় সারা দেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অরিত্র এখন নিখোঁজ, কিন্তু তার মা–বাবার বুকফাটা কান্না ও মানুষের ভালবাসায় সে রয়ে গেছে সকলের হৃদয়ে।
0 Comments