বেবিডল আর্চি’ আসলে পুরুষ! এআই ফাঁদে ১৪ লাখ অনুসারী

সিবি ডেক্স: লাল শাড়ির নাচ, কেন্দ্রা লাস্টের সঙ্গে ছবি—দু’টি পোস্টেই রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল ‘বেবিডল আর্চি’। মাত্র ক’দিনেই অনুসারী বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ লাখ! কিন্তু আসল চমক আসে পরে—এই আলোচিত আইডির পেছনে কোনো নারী নয়, ছিলেন একজন পুরুষ।

অনলাইন সেনসেশন ‘বেবিডল আর্চি’র বাস্তব রূপ উন্মোচন করেছে ভারতীয় পুলিশ। জানা গেছে, এটি ছিল সম্পূর্ণ একটি ভুয়া প্রোফাইল—ডিজাইন করেছিলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার প্রীতম বোরা। উদ্দেশ্য ছিল প্রতিশোধ। আর নিশানা ছিলেন তার প্রাক্তন প্রেমিকা সাঁচী।

গুগল ট্রেন্ডে উঠে আসে ‘আর্চি’ নাম, তৈরি হয় শত শত ফ্যানপেজ ও মিম। কিন্তু ঘটনাপ্রবাহ মোড় নেয় ১১ জুলাই, যখন সাঁচীর ভাই ছবি ও ভিডিওসহ পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে—২০২০ সালে প্রোফাইলটি খোলার পর ২০২১ সাল থেকে চতুরভাবে এআই ও ডিপফেক প্রযুক্তি দিয়ে সাজানো হয় কনটেন্ট। প্রথমে সাঁচীর আসল ছবি ব্যবহার করে, পরে কৃত্রিমভাবে বানানো হয় মুখাবয়ব, ভিডিও ও ভয়েসওভার।

গোয়েন্দাদের দাবি, শুধু বিনোদনের জন্য নয়, আর্থিক ফায়দার জন্যও তৈরি হয়েছিল ‘বেবিডল আর্চি’। লিংকট্রি প্ল্যাটফর্মে প্রায় ৩ হাজার সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে বোরা আয় করেন অন্তত ১০ লাখ টাকা। গ্রেপ্তারের আগের পাঁচ দিনেই আয় ছিল প্রায় ৩ লাখ টাকা!

১২ জুলাই, তিনসুকিয়া জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বোরা-কে। জব্দ করা হয়েছে তার মোবাইল, ল্যাপটপ, হার্ড ড্রাইভ এবং ব্যাংক নথিপত্র। পুলিশ জানিয়েছে, সাঁচী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হলেও এখন তিনি ও তার পরিবার কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সুস্থ হচ্ছেন।

ঘটনার গভীরে উঠে এসেছে আরও এক গুরুতর প্রশ্ন—সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা কোথায়? মেটা (ইনস্টাগ্রাম) যদিও এই প্রোফাইল বন্ধ করেছে, তবুও তার কনটেন্ট এখনও ঘুরছে ইন্টারনেটজুড়ে।

সিবিএস-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, মেটা এখন থেকে যৌননির্ভর ডিপফেক তৈরির এআই টুলের বিজ্ঞাপনও সরিয়ে ফেলছে। কিন্তু ততদিনে ফাঁদে পড়েছে লাখো অনুসারী, একজন নারী হারিয়েছেন তার পরিচয়ের নিয়ন্ত্রণ।

Post a Comment

0 Comments