ধাওয়াপাড়ার বাসিন্দা রাহুল শেখ, যার আগে তিনটি বিয়ে হয়েছিল। একাধিক সন্তানের মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় স্ত্রীর পরিবারকে তাড়িয়ে দিয়ে সে দ্বিতীয় স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে বসবাস করছিল। সম্প্রতি রাহুলের সঙ্গে পরিচয় হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থানার উত্তর কুসুম দক্ষিণ পাড়ার গৃহবধূ মিনা খাতুনের। সম্পর্ক গাঢ় হতে থাকে। দিন সাতেক আগে মিনা নিজের দুই বছরের কন্যাসন্তান লামিয়াকে নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে প্রেমিক রাহুলের সঙ্গে পলাশিপাড়ায় চলে আসে।
বুধবার সন্ধ্যায় তারা জানান, ডায়রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে শিশুর। কিন্তু মেয়ের পরিবারের সন্দেহ হয়, এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—পুলিশকে খবর দেন তারা। দেহ উদ্ধার করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে, আর তাতেই ফাঁস হয়ে যায় নির্মম সত্য।
পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে মিনা ও রাহুল দুজনেই খুনের কথা স্বীকার করেছে। তদন্তে উঠে আসে, রাহুল মিনাকে স্পষ্ট শর্ত দেয়—“শিশুকন্যাকে সরিয়ে দিলে তবেই বিয়ে করে সংসার করবে।” স্বামীর কাছে ফেরার পথ বন্ধ দেখে নিজের সন্তানকে গলায় চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মিনা।
এরপর সাজানো হয় মিথ্যে নাটক—ডায়েরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার চালানো হয়। তবে লুকানো যায়নি নির্মম সত্য। প্রতিবেশীদের সন্দেহ ও রাহুলের কাকা লালন শেখের থানায় দায়ের করা অভিযোগে পলাশিপাড়া থানার পুলিশ দুজনকেই গ্রেপ্তার করে।
বৃহস্পতিবার ধৃতদের পাঠানো হয়েছে তেহট্ট মহকুমা আদালতে। শিশুটির মরদেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় সমগ্র এলাকায় নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভের ছায়া।
0 Comments