সাপ্তাহিক ছুটির দিনকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে নেমেছে পর্যটকের ঢল। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে সাগরতীর। বিশেষ করে লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ভিড়। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সাগরের নোনাজল আর বালুচরে পর্যটকদের আনন্দ-হৈহুল্লোড়ে মুখর হয়ে ওঠে পুরো সৈকত এলাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টজুড়ে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুধুই মানুষ আর মানুষ। সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে খুনসুটি, বালুচরে ঘোরাঘুরি আর আনন্দঘন মুহূর্তে পর্যটকদের উচ্ছ্বাসে ফুটে উঠেছে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের এক অনন্য মেলবন্ধন।
সপ্তাহের কর্মব্যস্ততা আর ক্লান্তি ঝেড়ে পরিবার-পরিজন কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে ছুটে আসছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। মাহমুদা ইসলাম বলেন, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে লোকসমাগমই তার ভালো লাগে। তার মতে, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত মানেই সবাই মিলে উপভোগ করা।
নূরুল আলম জানান, বিনোদনের উদ্দেশ্যে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে জীবনে প্রথমবার কক্সবাজারে এসেছেন তিনি। সৈকতের পরিবেশকে তিনি অত্যন্ত উপভোগ্য বলে উল্লেখ করেন। রোকেয়া রহমান বলেন, জীবনে প্রথমবার কক্সবাজার এসে সমুদ্র না ছুঁয়েও এর সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করেছে। সরওয়ার আলম বলেন, মন খারাপ হলে কক্সবাজারই তার প্রথম গন্তব্য।
পর্যটকের এমন ভিড়ে খুশি সৈকতপাড়ের ব্যবসায়ীরা। বার্মিজ পণ্যের দোকানদার শাহাব উদ্দিন জানান, গত সপ্তাহে দৈনিক বিক্রি ছিল পাঁচ হাজার টাকার মতো, আর এখন তা বেড়ে ৩০ হাজার টাকার বেশি হয়েছে। আচার ও টুপি বিক্রেতা বাবু বড়ুয়া বলেন, পর্যটক বাড়ায় আগের লোকসান কাটিয়ে ওঠার আশা করছেন তারা।
তবে পর্যটকের চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি উঠেছে। হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইসের মহাব্যবস্থাপক মো. ইয়াকুব আলী বলেন, লাবণী পয়েন্ট থেকে মেরিন ড্রাইভ হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত এলাকাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন জোন হিসেবে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা প্রয়োজন।
পর্যটনের প্রাণ ফিরলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এটি নিশ্চিত করা গেলে কক্সবাজার আরও নিরাপদ ও আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
0 Comments