কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মালিকানাধীন খালের তীরের সরকারি জমি দখল করে প্লট আকারে বিক্রির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি সাইফুল ইসলামের নাম উঠে এসেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উজানটিয়া ইউনিয়নের কাটাফাঁড়ি খালের তীরে জেগে ওঠা এক একরের বেশি জায়গা আরসিসি পিলার বসিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দখলে নেওয়া হয়েছে। ওই জমিতে ২০ শতক করে মোট ছয়টি প্লট তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্লটে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটার কাজ চলছে। অভিযোগ রয়েছে, নুরতাজ বেগম নামের এক নারীর কাছে ইতোমধ্যে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় একটি প্লট বিক্রি করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সাইফুল ইসলাম সরকারি খালের জমি দখল করেছেন। খালের জায়গা ভরাট করে সেখানে বসতবাড়ি নির্মাণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, যা প্রাকৃতিক জলপ্রবাহ ব্যাহত করবে এবং ভবিষ্যতে এলাকায় জলাবদ্ধতার ঝুঁকি বাড়াবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষক দলের নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, “খাল লাগোয়া জায়গাটি আমাদের বাপ-দাদার বসতভিটা। ছয় ভাইয়ের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে সীমানা দেওয়া হয়েছে। আমার এক চাচা তার অংশের ২০ শতক জায়গা বিক্রি করেছেন।” তিনি সরকারি খাল দখলের অভিযোগ অস্বীকার করলেও পাউবো বা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে স্বীকার করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ওসমান গনি জানান, জায়গাটি মূলত পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও দীর্ঘদিন ধরে সাইফুল ইসলামের পরিবারের ভোগদখলে রয়েছে। সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি তিনি নিজেও প্রত্যক্ষ করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ড (কক্সবাজার পাউবো বিভাগ-২)-এর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জমির উদ্দিন বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে জমিটি পাউবোর মালিকানাধীন কি না যাচাই করা হবে। দখলের সত্যতা পাওয়া গেলে উচ্ছেদসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পেকুয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নুরুল আখতার নিলয় জানান, কাটাফাঁড়ি খালের জায়গা দখলের অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী কোনো কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না জানিয়ে পেকুয়া উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আবু ছিদ্দিক রনি বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0 Comments