ভেন্টিলেশনে খালেদা জিয়া, অবস্থা সংকটাপন্ন

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আবারও অবনতি হয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ডের সর্বশেষ আপডেটে জানানো হয়েছে—তাকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিনের জটিল রোগসমূহের পাশাপাশি সাম্প্রতিক পরীক্ষা–নিরীক্ষায় তার ফুসফুস, হৃদযন্ত্র ও কিডনির অবস্থার দ্রুত অবনতি ধরা পড়ে।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার লিভার, কিডনি, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আরথ্রাইটিস ও ইনফেকশনজনিত দীর্ঘস্থায়ী জটিলতা বহুদিনের। ২৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, তার শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি, রক্তে অক্সিজেন কমে যাওয়া এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া। প্রথমে হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা ও বাইপ্যাপ মেশিনে চিকিৎসা দেওয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। পরে ফুসফুসসহ অন্যান্য অঙ্গকে ‘রেস্ট’ দেওয়ার জন্য তাকে ইলেক্টিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়।

তার অবস্থার অবনতির সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে কিডনি–জনিত জটিলতা। কিডনির কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিয়মিত ডায়ালাইসিস দেওয়া হচ্ছে। উন্নত অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিৎসা চলছে, কিন্তু জ্বর এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়েছে। বোর্ডের সদস্য ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. শাহাবউদ্দিন তালুকদারের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়—সবচেয়ে সতর্কতা, পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা চলছে, তবে তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “তিনি এখনও আইসিইউতে। মানুষের যে পর্যায়ের চিকিৎসা প্রয়োজন, সেটিই দেওয়া হচ্ছে। তিনি একজন রোগী—এখানে কিছু নৈতিক বাধা আছে, সব কিছু প্রকাশ করা যায় না।”

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ৫ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে ঢাকায় এসে শাশুড়ির চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে বিদেশে নেওয়ার সম্ভাবনাও পরিবার ও বোর্ড পর্যালোচনা করছে। মেডিক্যাল বোর্ড ও পরিবার সবার কাছে দোয়া চেয়েছে।

Post a Comment

0 Comments