অভিযান চলাকালীন পেশকারপাড়া এলাকায় শত শত নারী-পুরুষ ও স্কুল শিক্ষার্থী সড়কে বসে বিক্ষোভ করেন। বৈদ্যুতিক খুঁটি ও বাঁশ ফেলে সড়ক অবরোধ করে তারা দাবি জানান, ‘মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বসতি ছাড়ব না।’
বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন জানান, তৃতীয় দিনে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় অভিযান সম্ভব হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনে তা পুনরায় শুরু হয়েছে এবং দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।
মামলা ও গ্রেফতার
তৃতীয় দিনের ব্যর্থ অভিযানের পর বুধবার রাতেই ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজার নৌবন্দর কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াকিল বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেন। এর আগে মঙ্গলবার পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ২৫০ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়, যেখানে চারজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নদীর ইতিহাস ও দখল
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদীর সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে নুনিয়ারছড়া থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। গত ১০-১২ বছরে এখানে এক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে। প্রভাবশালীদের দখল তালিকায় অন্তত ৩৫০ জনের নাম রয়েছে।
২০১০ সালের প্রজ্ঞাপনে নদীর ৭২১ একর জমি বিআইডব্লিউটিএকে হস্তান্তরের নির্দেশ থাকলেও জেলা প্রশাসন জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় দখল অব্যাহত থাকে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে অভিযান চালিয়ে ৩০০ একরের বেশি জমি উদ্ধারের পরও ফের দুই শতাধিক স্থাপনা গড়ে ওঠে।
হাইকোর্টের নির্দেশ ও নতুন উদ্যোগ
হাইকোর্ট গত ২৪ আগস্ট নির্দেশ দিয়েছে, চার মাসের মধ্যে বাঁকখালী নদী দখলমুক্ত ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এর অংশ হিসেবে শনিবার কক্সবাজার সফরে আসেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, “দখলদারদের সমন্বিত তালিকা তৈরি করে উচ্ছেদ করা হবে।”
সোমবার থেকে শুরু হওয়া অভিযানে প্রথম দুই দিনেই ৭০ একর জমি উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
0 Comments