জুলাই ঘোষণাপত্রে বিভক্ত মত, বিএনপি আশাবাদী জামায়াত হতাশ

সিবি ডেক্স: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঘোষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে ভিন্নমুখী অবস্থান নিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি একে গণতান্ত্রিক উত্তরণের ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখলেও, জামায়াত এই ঘোষণাকে অপূর্ণাঙ্গ ও হতাশাজনক বলে অভিহিত করেছে।

বুধবার (৬ আগস্ট) সকালে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “হতাশ! যারা হতাশ হয়, তারা সারাজীবনই হতাশ থাকে।” পাশে থাকা স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা আশা করবো জামায়াত ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এই জাতীয় সংকট সমাধানে এগিয়ে আসবে।”

এর আগে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয় ‘৩৬ জুলাই উদযাপন’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। এতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাঠ করেন ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’। মঞ্চে ছিলেন বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির শীর্ষ নেতারা।

তবে এই ঘোষণাপত্র নিয়ে জামায়াতের ভেতরে দ্বৈত প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সময় সংবাদে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, “এই ঘোষণাপত্রে আমাদের চাওয়া অনুযায়ী কোনো প্রতিফলন নেই। এটা কবে থেকে কার্যকর হবে, তাও স্পষ্ট নয়।” তিনি আরও বলেন, “দায়িত্ব সরকারের, অথচ বলা হলো আগামী সরকার বাস্তবায়ন করবে—এই জাতীয় ইস্যুকে হালকাভাবে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে।”

তবে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “ঘোষণাপত্র এসেছে, অন্তত এটাকে আমরা ইতিবাচক বলেই দেখছি। দলীয়ভাবে আলোচনার পর চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া জানাব।”

বুধবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায় জামায়াতে ইসলাম। সেখানে ডা. তাহের বলেন, “ঘোষণাপত্রে জনগণের প্রত্যাশা প্রতিফলিত হয়নি। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই দিতে হবে। তা না হলে আন্দোলনের পথে যাব আমরা।”

অন্যদিকে বিএনপি নেতারা এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে সমৃদ্ধ করবে। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ঘোষণা রাজনৈতিক অচলাবস্থা দূর করবে। অতিদ্রুত নির্বাচন এবং রাষ্ট্র সংস্কারেই জাতির মুক্তি।”

স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “সংস্কার বাস্তবায়নের একমাত্র সাংবিধানিক পথ হলো নির্বাচিত সংসদ। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য সঠিক ও বাস্তবধর্মী।”

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে ঘোষিত দলিলই হলো এই জুলাই ঘোষণাপত্র।

Post a Comment

0 Comments