ধনধান্য সভাগৃহে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে এবার মহানায়ক সম্মানে ভূষিত হন খ্যাতনামা পরিচালক গৌতম ঘোষ। সম্মান পান সঙ্গীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচী, ইমন চক্রবর্তী, অভিনেত্রী গার্গী রায়চৌধুরী, রূপটান শিল্পী সোমনাথ কুণ্ডু ও শিল্প নির্দেশক আনন্দ আঢ্য। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, নচিকেতা, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, ববি হাকিম, ইন্দ্রনীল সেন, সৌমিতৃষা কুণ্ডু প্রমুখ।
সৌমিতৃষার নাম নিতে গিয়ে বারবার হোঁচট খান মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে বলেন ‘সৌমিত্র’, তারপর ‘সৌমিরিষা’, শেষে সঠিক উচ্চারণে পৌঁছে মজা করে বলেন,
“বাপরে! এত বড় নাম! ছোটবেলায় তো উচ্চারণ করতেই পারতে না! আমাদেরও অসুবিধা হচ্ছে!”
এরপরই মমতা আক্রমণ শানান সিরিয়াল কনটেন্টের প্রতি। বলেন,
“এখনকার সিরিয়ালে দেখি, কেউ কাউকে বিষ দিচ্ছে, কেউ বন্দুক ধরছে, এক পরিবারে তিনটে ঝগড়া! এটা দেখে বাচ্চারা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।”
টিভি সিরিয়াল নির্মাতাদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে বলেন,
“রোজ সিরিয়াল বাড়াতে গিয়ে রোজ গুন্ডামি চলছে। খারাপ কিছু শেখাবেন না। ভালো বিষয় আছে, ইনোভেটিভ কনটেন্ট দিন। এটা রিল্যাক্সেশনের জায়গা, টেনশনের না।”
বাংলা গানের গুরুত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
“আজ টিভি সিরিয়ালে বাংলা গান নেই! বাংলা ভাষা ভুলে যাচ্ছি ডাবিং করতে করতে। হিন্দি অবশ্যই থাকবে, কিন্তু বাংলা বাদ দিয়ে কিছু হবে না।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন,
“যে গানগুলো একসময় শুনতাম, আজও ঠোঁটস্থ। বাংলা গানের সেই স্বর্ণযুগ শেষ হয়নি। তার ভাষা, সুর, কথার গভীরতা ভাবুন।”
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে ‘ভাষা সন্ত্রাস’-এর অভিযোগও। বলেন,
“বাংলা ভাষায় যারা কথা বলেন, তাঁদের ওপর অত্যাচার চলছে। ভাষা বাঁচাতে সর্বস্তরে আন্দোলন দরকার।”
এই বার্তায় সমর্থনে একজোট হয় টলি ইন্ডাস্ট্রির তারকারাও।
মহানায়ক উত্তমকুমারের মৃত্যুদিবসে মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা যেন বাংলা সংস্কৃতির প্রতি এক জোরালো আহ্বান—ভাষা ও সুরের আত্মপরিচয় রক্ষা করতেই হবে।
0 Comments