শিশুটির মা শাহানুর বেগম জানান, প্রায় ১২ বছর আগে পারিবারিকভাবে একই উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মাঝিরহাট এলাকার বাসিন্দা শান্তের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে তাঁদের আরও দুটি সন্তান রয়েছে। তবে বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামীর নির্যাতন ও মানসিক লাঞ্ছনার শিকার হয়ে আসছেন তিনি।
তিনি জানান, দুই সন্তানসহ ঢাকায় স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছিলেন। কয়েক মাস আগে শান্তের পরকীয়া প্রেম নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় বাধা দেওয়ায় তাকে মারধর করা হয়। পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি বাবার বাড়ি ভোলায় চলে আসেন।
শাহানুর বেগমের অভিযোগ, বাবার বাড়িতে ফিরে সন্তান জন্ম দিলেও শান্ত শিশুটিকে নিজের সন্তান হিসেবে অস্বীকার করছেন। তার দাবি, স্বামীর দীর্ঘদিনের পরকীয়াই এই অস্বীকৃতির মূল কারণ। তিনি ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।
অন্যদিকে শান্ত বলেন, কীভাবে তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন, তা তিনি বুঝতে পারেননি। এ কারণে শিশুটির পিতৃত্ব নিয়ে তার সন্দেহ রয়েছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বৈধ বিবাহের মধ্যে জন্ম নেওয়া সন্তানের দায় এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। পিতৃত্ব নিয়ে সন্দেহ থাকলে আদালতের মাধ্যমে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করা যেতে পারে।
মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, এই বিরোধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নবজাতক শিশুটি। তার মৌলিক অধিকার—নিরাপত্তা, পরিচয় ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের কার্যকর ভূমিকা জরুরি।
ভোলা সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, শিশুটির মায়ের আইনি সহায়তার বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর পাশে থাকবে। প্রয়োজনে শিশুটি অনিরাপদ হলে বেবি হোমে রাখার ব্যবস্থাও করা হবে।
ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, শিশুটির খোঁজখবর নেওয়া হবে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
বর্তমানে নবজাতকটি তার মায়ের কাছেই রয়েছে। তবে পিতৃত্ব অস্বীকার ও পারিবারিক সংকটের মধ্যে শিশুটির নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করতে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
0 Comments