রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি ফ্ল্যাটে মা–মেয়েকে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী পরিচয়ে কাজ নেয়া ‘আয়েশা’ নামে এক তরুণীকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার প্রকৃত নাম ও স্বামীর পরিচয়ও নিশ্চিত করা হয়েছে; তবে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার সম্ভব হয়নি।
পুলিশ ও গোয়েন্দাদের মতে, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদেই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত উদ্দেশ্য পরিষ্কার হবে। সোমবার সকালে ফ্ল্যাটের সপ্তম তলায় ছুরিকাঘাতে খুন হন লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়া (১৫)। পরদিন নাটোরে দাফন সম্পন্ন হয়।
মামলায় বাসা থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার খোয়া যাওয়ার তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়—হত্যার পর স্কুলড্রেস পরা এক তরুণী ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে ‘আয়েশা’ নাম ব্যবহার করে কাজ নেয়া প্রায় ২০ বছর বয়সী ওই তরুণীকে হত্যার নেপথ্যে সন্দেহ করছেন স্বজনরা। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক।
তদন্তসূত্র জানিয়েছে, তিনি মিথ্যা নাম-পরিচয় ও ঠিকানা দিয়েছিলেন এবং কাজ নেয়ার সময় হাতে মোবাইলও ছিল না। পরে যে ফোনটি নিয়ে বের হন, সেটি বের হতেই বন্ধ করে দেন। আশপাশের অধিকাংশ ক্যামেরা অচল থাকায় পালানোর পথ নিশ্চিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, ভুল তথ্যের কারণে পরিচয় নিশ্চিত করতে সময় লেগেছে, তবে এখন শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৭টায় বাসা থেকে বের হন লায়লা আফরোজের স্বামী। ফেরার পর তিনি স্ত্রীর ও মেয়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ৭:৫১ মিনিটে আয়েশা বাসায় প্রবেশ করে এবং ৯:৩৫ মিনিটে স্কুলড্রেস পরে বেরিয়ে যায়, সঙ্গে নিয়ে যায় মূল্যবান জিনিসপত্র।
সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি এবং নাফিসার দেহে ৪টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হত্যার উদ্দেশ্য এখনও অজানা বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন।
0 Comments