হাদি হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তি

সিবি ডেক্স: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকার দুইটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জবানবন্দিদাতারা হলেন— ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু এবং বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা। এর আগে একই মামলায় ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম আদালতে জবানবন্দি দেন।

ডিবি পুলিশের তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর গত ১৫ ডিসেম্বর আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় তাদের আরও চার দিনের রিমান্ড দেন আদালত। বুধবার রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে তারা স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর ফয়সাল আহমেদের আবেদনের পর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে সামিয়া ও সিপু এবং মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে মারিয়া আক্তার লিমা জবানবন্দি দেন। পরে তিনজনকেই কারাগারে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেন ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান।

উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া শরীফ ওসমান হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত শুক্রবার বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগকালে চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় তাকে গুলি করা হয়। মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা এক আততায়ী তার মাথায় গুলি করে।

গুরুতর আহত অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান।

ঘটনার পর গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন, যা পরে হত্যা মামলায় রূপ নেয়। এ পর্যন্ত মামলায় মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন— ফয়সালের বাবা-মা, স্ত্রী, শ্যালক, বান্ধবী, রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ী মুফতি মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, সহযোগী মো. কবির। এছাড়া ফয়সালকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে আমিনুল ইসলাম রাজু, সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম নামে আরও তিনজনকে আটক করা হয়েছে।