চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকায় বাড়ি নির্মাণকে কেন্দ্র করে ভয়ংকর চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। মিজান ও জসিম নামে দুই ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণ শুরু করলে বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর নামে তাদের কাছে ৮০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে সন্ত্রাসীরা। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সশস্ত্র মহড়া চালিয়ে ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শুধু মিজান ও জসিমই নন, একই এলাকার আমির হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম নামের আরও দুই ব্যক্তির বাড়ি নির্মাণও চাঁদার দাবিতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে ‘যুবদল নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু গুলি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয়রা সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র মহড়ার ভিডিও ফুটেজ পাঠান। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) কালের কণ্ঠের হাতে আসা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দুই যুবক অস্ত্র উঁচিয়ে নির্মাণাধীন ভবনের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে এবং বের হওয়ার সময় একজন পিস্তল উঁচিয়ে গুলির হুমকি দেয়। অপরজন গেটের বাইরে একাধিকবার অস্ত্র তাক করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
স্থানীয়রা জানান, এক পথচারী সন্ত্রাসীদের দেখে পুলিশের জাতীয় সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে এবং সন্ত্রাসীদের ধরতে কাজ চলছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, অস্ত্রের মুখে হুমকি দেওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা জানায়, পলাতক সন্ত্রাসী রায়হান ও ইমন গাড়িতে অপেক্ষা করছে। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তারা পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সহায়তায় নির্মাণকাজ শুরু করলে হোয়াটসঅ্যাপে গালাগাল ও হুমকিমূলক বার্তা পাঠানো হয়।
জানা গেছে, চান্দগাঁও, বায়েজিদ, পাঁচলাইশ ও হাটহাজারী এলাকায় নতুন বাড়ি নির্মাণ, ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা জমি কেনাবেচা শুরু হলেই সাজ্জাদের অনুসারীরা ফোন করে চাঁদা দাবি করে। আদায়কৃত টাকার একটি অংশ সাজ্জাদ আলীর কাছে পাঠানো হয়।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা সাজ্জাদের একসময় ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন নুরুন্নবী ম্যাক্সন, সারোয়ার হোসেন বাবলা ও ঢাকাইয়া আকবর। তারা সবাই হত্যার শিকার হন। বর্তমানে কারাগারে থাকা সাজ্জাদ হোসেনের সহযোগী রায়হান ও ইমন সাজ্জাদ আলীর চাঁদাবাজি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
0 Comments