পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ইং তারিখ সকাল আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে একটি প্রতারক চক্র একটি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইলে পুলিশ সুপার, কক্সবাজারের ছবি সংযুক্ত করে নিজেকে সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দেয়। তারা কক্সবাজার সদর মডেল থানাধীন কলাতলী রোডের হোটেল নিরিবিলি অর্কিডে অবস্থানরত আব্দুল্লাহ আল আমিনকে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।
ভুক্তভোগীকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি হিসাবে টাকা পাঠাতে বলা হলে ভয়ভীতির কারণে তিনি উক্ত ব্যাংক হিসাবে দুই লক্ষ টাকা জমা দেন। পরে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে তিনি পুলিশ সুপার, কক্সবাজার মহোদয়কে অবহিত করেন। তখনই নিশ্চিত হওয়া যায়, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ঘটনার বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ সুপার, কক্সবাজার মহোদয় তাৎক্ষণিকভাবে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, এই প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কর্মকর্তাদের নাম ও ছবি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল।
এ ঘটনায় এসআই মিল্টন দে বিপিএম, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২৮, তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইং। মামলায় পেনাল কোডের ৪১৯, ৪২০, ৪০৬, ৩৮৫, ৩৮৬ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় এসআই রঞ্জন বিশ্বাসকে।
তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তি ও দালিলিক প্রমাণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতারক চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি আভিযানিক দল ঢাকা ও কুমিল্লায় অভিযান পরিচালনা করে ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ সাগর আহম্মেদ (২৮), ঢাকা বাড্ডা এবং মোঃ হুমায়ন কবির (৪৪), কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
এছাড়াও একই চক্রের অপর সদস্য মোঃ দ্বীন ইসলামকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ এর আগে ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ আড়াইহাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার ছবি ও পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
0 Comments